আমাদের দিনের শুরুটা ভালো হলে সারা দিন কাজ করার এনার্জি বজায় থাকে। সকালে সঠিক খাবার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ব্রেকফাস্ট শুধু এনার্জি বাড়ায় না, বরং মানসিকভাবে সতেজ রাখতেও সাহায্য করে।
সকালে এনার্জি বাড়ানোর জন্য সেরা খাবারগুলো
১. ফল:
ফল বিশেষত কলা, আপেল এবং বেরি জাতীয় ফল এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে। এগুলোতে প্রাকৃতিক চিনি এবং ভিটামিন থাকে যা শরীরকে শক্তি দেয়। ফলগুলো স্মুদি আকারে বানিয়ে তাতে চিয়া সিড, মধু বা বাদাম যোগ করো। এটি দ্রুত তৈরি করা যায় এবং খেতে সুবিধা।
২. ডিম:
ডিম প্রোটিনের একটি অসাধারণ উৎস। সকালের নাস্তায় সিদ্ধ বা ভাজা ডিম খেলে শরীর অনেকক্ষণ পর্যন্ত এনার্জি পায়। ডিমের সঙ্গে কিছু সবজি (যেমন পালং শাক, ক্যাপসিকাম) মিশিয়ে অমলেট বানিয়ে খেতে পারো।
৩. ওটস বা ওটমিল:
ওটস হলো একটি সেরা ব্রেকফাস্ট অপশন। এতে ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট থাকে যা দীর্ঘ সময় ধরে এনার্জি বজায় রাখে। আপনি ওটসের সঙ্গে মধু, ফল বা বাদাম মিশিয়ে খেতে পারেন। ওটসের সঙ্গে দুধ বা দই মেশাও এবং কিছু ফ্রেশ বেরি বা কাটা ফল যোগ করো। এতে স্বাদ এবং পুষ্টি বাড়বে।
৪. বাদাম এবং বীজ:
আমন্ড, আখরোট, সূর্যমুখীর বীজ বা চিয়া সিড সকালের জন্য দারুণ। এগুলোতে ভালো ফ্যাট ও প্রোটিন রয়েছে, যা এনার্জি বাড়ায়। এক মুঠো আমন্ড বা আখরোটের সঙ্গে কিছু শুকনো ফল (যেমন কিশমিশ বা খেজুর) মিশিয়ে খেতে পারো।
৫. গ্রিন টি বা ব্ল্যাক কফি:
আপনি যদি সকালে চা বা কফি খেতে পছন্দ করেন, তাহলে গ্রিন টি বা ব্ল্যাক কফি বেছে নিতে পারেন। এগুলো শরীরে সতেজতা আনতে সাহায্য করে। গ্রিন টি খাওয়ার সময় লেবুর রস মেশালে এটি আরও উপকারী হবে।
৬. পুরো শস্যের রুটি বা টোস্ট:
পুরো শস্যের রুটিতে ফাইবার এবং জটিল কার্বোহাইড্রেট থাকে যা ধীরে ধীরে এনার্জি সরবরাহ করে। এর সঙ্গে পিনাট বাটার বা হানি ব্যবহার করতে পারেন। পিনাট বাটারের সঙ্গে কয়েকটি স্লাইসড কলা যোগ করো। এটি শক্তির একটি দারুণ উৎস।
আরও পড়ুন: 2025 সালে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য 15 টি ঘরোয়া টিপস
সকালের খাবার খাওয়ার সময় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- সকালে নাস্তা কখনো এড়িয়ে যাবেন না।
- ভারী এবং ভাজা খাবারের বদলে হালকা কিন্তু পুষ্টিকর খাবার বেছে নিন।
- প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারের ভারসাম্য বজায় রাখুন।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে ১ গ্লাস গরম পানি বা লেবু পানি পান করো। এটি শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করবে।
- সকালে নাস্তা দেরি না করে ঘুম থেকে ওঠার ১ ঘণ্টার মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করো।
- প্রতিদিন একই ধরনের ব্রেকফাস্ট না করে বৈচিত্র্য আনো।
সকালের সঠিক খাবারের উপকারিতা
সকালে সঠিক খাবার খাওয়ার সরাসরি উপকারিতাগুলো নীচে উল্লেখ করা হল
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- মনোযোগ বাড়ায়।
- মেটাবলিজম উন্নত করে।
- এনার্জি বাড়ায়
- শরীরের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ
- দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
- মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে
- ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক
আরও পড়ুন: চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায়
এনার্জি ধরে রাখার জন্য কিছু ব্যায়ামের টিপস
সকালের খাবারের আগে বা পরে ৫ থেকে ১০ মিনিটের হালকা ব্যায়াম করলে এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে।
যেমন:
- যোগব্যায়াম (সান স্যালুটেশন)।
- দ্রুত হাঁটা।
- হালকা স্ট্রেচিং
- ডিপ ব্রেথিং এক্সারসাইজ
- স্কোয়াট এবং লাঞ্চ
- হালকা জগিং বা দৌড়ানো
- প্ল্যাঙ্ক
টিপস:
- ব্যায়াম শুরুর আগে ৫ মিনিট ওয়ার্ম আপ এবং শেষে কুল ডাউন করো।
- সকালে খালি পেটে ভারী ব্যায়াম না করে হালকা ব্যায়াম করো।
- পর্যাপ্ত পানি পান করো এবং ব্যায়ামের পর একটি হালকা স্ন্যাকস (যেমন কলা বা ওটস) খেয়ে নাও।
- প্রতিদিন একই সময়ে ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তোল।
আরও পড়ুন: পেটের সমস্যা দূর করার সহজ উপায়
ভুল খাবারের তালিকা
সকালে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। সেগুলো নীচে উল্লেখ করা হল।
উদাহরণ:
- ভাজাপোড়া খাবার।
- অতিরিক্ত মিষ্টি বা চিনি।
- কার্বনেটেড ড্রিঙ্ক।
- প্রসেসড বা প্যাকেটজাত খাবার
- ক্যাফেইন বেশি পরিমাণে
- ফ্রেঞ্জ ফ্রাই বা প্রসেসড মিট
- প্যাকেটজাত স্ন্যাকস
- ফলের রসের বদলে শুধুমাত্র ফল
- খালি পেটে সাইট্রাস ফল
Join Our Facebook Page: Click Here
সকালে কী খেলে এনার্জি থাকবে FAQ
সকালের নাস্তায় সবচেয়ে ভালো খাবার কী
ফল বিশেষত কলা, ডিম, ওটস বা ওটমিল, বাদাম এবং বীজ, গ্রিন টি বা ব্ল্যাক কফি।
সকালে কতক্ষণ পর খাবার খাওয়া উচিত
ঘুম থেকে ওঠার ১ ঘণ্টার মধ্যে খাবার খেলে শরীরে এনার্জি থাকে
সকালে শুধু চা/কফি খাওয়া কি যথেষ্ট
না। শুধুমাত্র চা/কফি খেলে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। এর সঙ্গে একটি পুষ্টিকর খাবার অবশ্যই খেতে হবে।
সকালের নাস্তায় কি বাদাম খাওয়া ভালো
হ্যাঁ, বাদাম খাওয়া খুবই উপকারী। এটি এনার্জি বাড়ায় এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে।
কি প্রতিদিন খাওয়া উচিত
হ্যাঁ, আপনি প্রতিদিন ১-২টি ডিম খেতে পারেন যদি আপনার কোলেস্টেরলের সমস্যা না থাকে।